৬০ মাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম এখন ইরানের হাতে।

Spread the love

পরমাণু শিল্পে ইরানের অগ্রগতি রুখে দিতে প্রথমে ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আমেরিকা , কিন্তু তাতেও ইরানের পরমাণু শিল্পের অগ্রগতি থামানো না গেলে তৎকালীন বারাক ওবামা প্রশাসন ইরানের সাথে পরমাণু আলোচনা শুরু করেন। দীর্ঘ ৩ বছর আলোচনার পর ইরানের সাথে পরমাণু ইসু নিয়ে একটি শান্তি পূর্ণ সমাধানে পৌঁছাতে সক্ষম হন ওবামা প্রশাসন। বিশ্ব ব্যাপী ভূয়সী প্রশংসা পান বারাক ওবামা , জন ক্যারি , জাভেদ জারিফ সহ আমেরিকা এবংইরানের পুরো আলোচক দল। শান্তি তে নোবেল পুরস্কার ও পান বারাক ওবামা। চুক্তি অনুযায়ী ইরান ৩.৫ মাত্রার চেয়ে বেশি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবেনা বিনিময়ে ইরানের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা গুলো তুলে নেয় আমেরিকা .

 

কিন্তু বিপত্তি বাধে তখন যখন ২০১৮ সালে আমেরিকা পরমাণু চুক্তি ভঙ্গ করে এবং ইউরোপে এর বাকি দেশ গুলো ও চুক্তি টি রক্ষা করতে অপারগ হয়। ডোনাল্ড ট্রাম একজন জুঁয়াড়ী বিধায় তিনি ভেবেছিলেন পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পুনরায় আলোচনায় বসে ইরানের দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র গুলোর পাল্লা কমিয়ে আনার বিনিময়ে পুনরায় আরেকটি চুক্তি করবেন। কিন্তু পুরো পৃথিবীর সামনে নির্লজ্জ্ব ভাবে চুক্তি ভঙ্গকারী ট্রাম্প কে ইরান আর বিশ্বাস করতে পারেনি বিধায় ট্রাম্পের সাথে  আলোচনার টেবিলে বসেনি ইরান এবং পূর্বের ন্যায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে শুরু করে। এটিকে ট্রাম্প প্রশাসনের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা বলে বিবেচনা করা হয়।

 

বর্তমানে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইরান তেল রপ্তানি করছে ভেনিজুয়েলা লেবানন সিরিয়া আফগানিস্তান ইত্যাদি দেশে। ফলে কার্যত নিষেধাজ্ঞা আরোপের মেকানিজম বিকল হতে শুরু করে। উল্টো বিশ্বের তেল বাণিজ্যের একটি অংশ ডলার ভিন্ন অন্য মুদ্রায় সম্পাদিত হতে শুরু করে। বলা বাহুল্য যে কেবল মাত্র তেল বাণিজ্যে ডলারের ব্যবহার বাধ্যতা মূলক হওয়ায় পৃথিবীর সকল দেশ নিজেদের পণ্য রপ্তানির বিনিময়ে মার্কিন ডলার মজুদ করে, যার উপর ভিত্তি করে দাড়িয়ে আছে আমেরিকার সকল শক্তি। ( ৯৩০ সালে সৌদ পরিবারের সাথে প্রেসিডেন্ট নিক্সন চুক্তি করেন তেল সম্পদ কেবল ডলার এর বিনিময়ে বিক্রি করবে বিনিময়ে সৌদ পরিবার কে ক্ষমতায় রাখবে আমেরিকা )। সুতরাং তেল ব্যবসা যদি ডলার ভিন্ন অন্য মুদ্রায় সম্পাদিত হতে থাকে তাহলে আমেরিকার ডলার প্রিন্টিং ইকোনোমিতে ধ্বস নামবে।

 

অপর দিকে ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করন মাত্রা বাড়িয়ে বর্তমানে ৬০ মাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে ফেলেছে . বলে রাখা ভালো যে পরমাণু বোমা তৈরী করতে ৮০-৯০ মাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম প্রয়োজন। ফলে জো বাইডেন প্রশাসনের সামনে এখন ইরানের সাথে আলোচনায় বসার কোনো বিকল্প নেই। নভেম্বরের ২৯ তারিখ আমেরিকার সাথে ইরানের নতুন করে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে। বর্তমানে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র পাল্লা কমানো তো দূরের কথা ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পরিমান কমিয়ে আনাই আমেরিকার মূল লক্ষ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে .

হাসনাইন শিশির

পিজিওগ্রাম বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *